শরীরের যত্ন রাখতে ঘৃতকুমারীর আর জুড়ি মেলা ভার। ঘৃতকুমারী যার পোশাকি নাম হল অ্যালোভেরা।ত্বক উজ্জ্বল রাখতে, চুল পড়া রোধ করতে , খুশকি কমাতে , ত্বক সজীব রাখতে এছাড়াও আরো নানা ত্বকের সমস্যার সমাধানের রহস্যের পেছনে লুকিয়ে আছে এই অ্যালোভেরা।আজকাল বিভিন্ন সাজগোজের দ্রব্যতেও অ্যালোভেরা ব্যবহার করা হচ্ছে।অ্যালোভেরার মধ্যে আছে অনেক ঔষধি উপাদান। এই জন্য অ্যালোভেরাকে সৌন্দর্য জগতের অনেক কাজেই ব্যবহার করা হয়।কিন্তু অনেকেই জানেন না এই ঘৃতকুমারী বা অ্যালোভেরা আরও কত ধরনের কাজে লাগে।শুধু সৌন্দর্য ক্ষেত্রেই নয় রক্ত চাপ কমাতেও ঘৃতকুমারীর জুড়ি নেই।তাই দেখে নেওয়া যাক যে কি কি উপায়ে ঘৃতকুমারী অর্থাৎ অ্যালোভেরা জেল আমাদের সারাদিনের কাজে ব্যবহার করা যায় ।
এবার দেখে নেওয়া যাক কি কি উপায়ে আমরা এই ঘৃতকুমারী বা অ্যালোভেরা জেল কে ব্যবহার করতে পারিঃ

ক) অ্যালোভেরা জেল অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট উপাদানে সমৃদ্ধ। এই জেল ত্বকের গভীরে প্রবেশ করে এবং এর ভিটামিন এ, বি ,সি ও এ উপাদান ত্বকের পুষ্টি যোগায়। তাই অ্যালোভেরা জেল ব্যবহার করে আপনি সহজেই আপনার ত্বকের যৌবন ধরে রাখতে পারবেন।প্রথমে একটি অ্যালোভেরা পাতা নিন।তারপর সেটিকে ভালোভাবে ধুয়ে নিন এবং ছুরি দিয়ে কেটে তার ভেতরে জেল বের করে নিন। সেই জেল ২ টেবিল চামচ একটি পাত্রে নিন এবং তার সাথে আধখানা লেবুর রস মিশিয়ে নিন।এই মিশ্রণটি প্রতিদিন বাইরে থেকে ঘুরে আসার পর মুখে লাগাবেন।মিশ্রণটি মুখে লাগানোর পর ১৫ মিনিট অপেক্ষা করবেন। তারপর ঠান্ডা জল দিয়ে মুখ ধুয়ে নেবেন।এটি রোজ করলে আপনার মুখের সানবার্ন দূর হয়ে যাবে।
খ) ত্বকের যত্ন নেওয়ার জন্য আমরা অনেক দাম দিয়ে বাজার থেকে অ্যালোভেরা জেল মেশানো আছে এমন কসমেটিকস কিনে আনি। সেইখানে অযথা পয়সা নষ্ট না করে আপনি বাড়িতেই বানিয়ে নিতে পারেন অ্যালোভেরা জেল।একটি অ্যালোভেরা পাতা কে ছুরি দিয়ে কেটে তার ভেতরের জেল বের করে মুখে লাগান এতে মুখের ত্বক মসৃণ হবে ,উজ্জ্বল হবে এবং নরম হবে।
গ) ঠোঁটের রং উজ্জ্বল রাখতে এবং ঠোঁটকে নরম রাখতেও অ্যালোভেরা জেলের জুড়ি নেই। এক টেবিল চামচ চালের গুঁড়ো আর অ্যালোভেরা জেল একটি পাত্রে মেশান।এই মিশ্রণ এরপর ঠোঁটে লাগিয়ে নিন এবং পাঁচ মিনিটের জন্য এটি রেখে এটিকে তারপর ঠাণ্ডা জল দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। রোজ এই মিশ্রণটি ঠোঁটে লাগালে আপনার ঠোঁট অনেক উজ্জ্বল মসৃণ এবং কোমল হয়ে উঠবে।
ঘ) অ্যালোভেরা জেল এর অনেক অ্যান্টিসেপটিক গুনাগুন আছে। অ্যালোভেরা জেল পাতা থেকে বের করে নিয়ে একটি পাত্রে করে ফ্রিজে রেখে দিন ।সেটি শরীরের কোথাও অল্প কেটে গেলে বা ব্যাথা লাগলে বা কোন জায়গায় ক্ষত হলে লাগান।এরকমভাবে দিনে ২-৩ বার লাগালে সেই ক্ষত সেরে যাবে।
আরও পড়ুনঃবিদ্যুতের বিল আসছে আকাশছোঁয়া?- দেখে নিন বিদ্যুতের বিল বাঁচানোর দশটি উপায়!
ঙ) আমাদের ত্বকে অনেক সময় মৃত কোষ জমা হয়ে ব্ল্যাকহেডস তৈরি হয়।এই ব্ল্যাক হেডসও অ্যালোভেরা জেল ব্যবহার করে দূর করা যায়। প্রথমে 1 চা-চামচ ফ্রেশ অ্যালোভেরা জেল নিয়ে ভালোভাবে ব্লেন্ড করে নিন। এরপর তাতে ১ চা চামচ ওটমিলের গুঁড়ো এবং হাফ চা চামচ অলিভ অয়েল মিশিয়ে একটি মাস্ক তৈরি করুন। এই মিশ্রণটি এবার আপনার সারা মুখে লাগিয়ে নিন এবং ৩০ মিনিট অপেক্ষা করুন। ৩০ মিনিট পর মিশ্রণটি ঠান্ডা জল দিয়ে পরিষ্কার করে ধুয়ে ফেলুন।সপ্তাহে একবার ব্যবহার করলেই অনেক উপকার পাবেন।
চ) আগেও বলা হয়েছে ত্বকের পাশাপাশি চুলের জন্যও অ্যালোভেরা জেল অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা বহন করে। অ্যালোভেরা জেল খুশকি দূর করার জন্য খুবই উপযোগী।এছাড়াও অ্যালোভেরা জেল ব্যবহার করলে চুল ও অনেক তাড়াতাড়ি বাড়ে।অ্যালোভেরা জেল মাথায় ব্যবহার করলে সেটি মাথার ত্বকের পিএইচ লেভেল ঠিক রাখে এবং তার ফলে খুশকিও দূর হয়ে যায়।অ্যালোভেরা জেল লেবুর সাথে কিংবা ক্যাস্টর অয়েল এর সাথে মিশিয়ে মাথায় লাগিয়ে নিন।লাগানোর পর কিছুক্ষণ অপেক্ষা করে তার পরে একটি অ্যান্টি ড্যানড্রাফ শ্যাম্পু দিয়ে সেটি ধুয়ে ফেলুন।এরকম ভাবে সপ্তাহে একদিন করে ব্যবহার করলে দেখবেন আপনার চুলের খুশকি দূর হয়ে গেছে।
ছ) এছাড়াও এখন গরমকালে সূর্যের তাপে মুখে অনেক সময় জ্বালা করে।তার জন্য অ্যালোভেরার পাতা থেকে জেল বের করে সেগুলো আইস ট্রেতে জমিয়ে রাখুন।যখনই মুখে এরকম জ্বালা করবে তখনই আইস ট্রে থেকে একটি কিউব বের করে নিয়ে মুখে ঘষে নেবেন। এতে আপনার মুখের ত্বকও ঠান্ডা হবে এবং আপনার মুখে যদি কোন ব্রণ বা অ্যাকনে থাকে তা দূর হয়ে যাবে।