অনেকের ডিম পছন্দের খাবার আবার অনেকে একেবারেই খেতে চান না ডিম।কেউ কেউ ভাবেন ডিম খেলে মোটা হয়ে যাবেন।আবার কেউ কেউ ভাবেন ডিম নিয়মিত খেলে হয়ে যেতে পারে হৃদরোগ।অনেকের আবার ধারনা থাকে ডিম খেলে রক্তে জমতে পারে ফ্যাট।আসলে কি সত্যিই এইগুলো ডিম খেলে হয়?এইসব ভ্রান্ত ধারনা থেকে বেরিয়ে আসার জন্য জানার দরকার ডিমের উপকারিতা ।
দেখে নিন ডিমের উপকারিতা –
১।অনেকেরই হয়তো জানা নেই এই ডিমেই থাকে ভিটামিন ডি।ভিটামিন ডি শরীরের পেশির ব্যথা কমাতে সাহায্য করে।
২।লোকের একটি ভ্রান্ত ধারণা আছে ডিম খেলে নাকি বেড়ে যায় ওজন।তা একেবারেই ভুল ধারনা।ডাক্তারদের কথা অনুযায়ী রোজ একটি করে ডিম খেলে রোজ শরীর থেকে কমে যেতে পারে ৪০০ ক্যালোরি অবদি ফ্যাট।সকালের জলখাবারে একটি করে ডিম খেলে সারাদিনে খিদে কম পায়, তাই খাবার বেশি পরিমানে খাওয়া হয় না ফলে ওজন থাকে আয়ত্তের মধ্যে।গবেষকদের সমীক্ষা অনুযায়ী শরীরের ৬৫% ওজন, ১৬% ফ্যাট ও ৩৪% অবদি কোমরে জমে থাকা মেদ কমাতে পারে ডিম।
৩।একটি ডিমে থাকে ৭০-৮৫ ক্যালরি এবং প্রোটিনের পরিমান থাকে ৬.৫ গ্রাম।আর ডাক্তারের কথা অনুযায়ী মেয়েদের শরীরে রোজ কমপক্ষে ৫০ গ্রাম প্রোটিনের দরকার।তাই অন্যান্য খাবারের সাথে রোজ একটি করে ডিম খেলে প্রোটিনের পরিমান সঠিক ভাবে পুষিয়ে যায়।
৪।ডিমে ভিটামিন ডি এর সাথে সাথে ভিটামন ই এরও উপস্থিতি বর্তমান।এই উপাদানটিও শরীরের পক্ষে উপকারী।ভিটামিন ই ত্বক এবং কোষে উৎপন্ন হওয়া ফ্রি র্যাডিক্যাল নষ্ট করে দেয়। এই উপাদানটি স্কিন ক্যান্সারও প্রতিরোধ করে।
৫।ভিটামিন এ মানুষের দৃষ্টিশক্তি উন্নত করতে সাহায্য করে।এই উপাদানটিও ডিমে বর্তমান।ডিমে আছে কেরোটিনয়েড, ল্যুটেন ও জিয়েক্সেনথিন নামক উপাদানগুলো যা বৃদ্ধ বয়সের চোখের অসুখ ম্যাকুলার ডিজেনারেশন হওয়ার সম্ভাবনা কমায়। চোখের ছানি পরা কমাতেও এই একই উপাদান সাহায্য করে।
৬।অনেকের ধারনা আছে ডিম খেলে শরীরে কোলেস্টেরল বেড়ে যায়।কিন্তু এমনটা কিছুই হয় না।বরং ডিমে আছে এমন একটি উপাদান যা রক্তে লোহিত রক্ত কণিকা গঠনে সাহায্য করে।
৭।ডিমে আছে ভিটামিন বি ১২।এই উপাদানটি আমরা যা খাদ্য গ্রহণ করছি সেইগুলিকে এনার্জিতে পরিবর্তন করতে সাহায্য করে।
৮।মেয়েদের মেনস্ট্রুয়েশনের জন্য শরীরে অনেক সময় রক্তাল্পতা দেখা দেয়।এতে শরীর তাড়াতাড়ি ক্লান্ত হয়ে পড়ে।ডিমের মধ্যে থাকা আয়রণ শরীরের এই ঘাটতি মেটাতে পারে।ডিমের মধ্যে উপস্থিত থাকা উপাদান জিঙ্ক শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে।আর দাঁত ও হাড় মজবুত করে ডিমের মধ্যে উপস্থিত থাকা ফসফরাস।
৯।২০০৩ সালে হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় একটি সমীক্ষায় দেখিয়েছে অ্যাডোলেশন পিরিয়ডে বা পরবর্তী কালে সপ্তাহে ৬টি করে ডিম নিয়মিত খেলে প্রায় ৪৪% ব্রেস্ট ক্যানসার প্রতিরোধ করা সম্ভব৷ সঙ্গে তারা এটাও জানিয়েছে, ডিম হৃৎপিণ্ডে রক্ত জমাট বাঁধতে দেয় না। ফলে স্ট্রোক বা হার্ট অ্যাটাক হওয়ার সম্ভাবনা অনেকটাই কমে যায়।
১০।কোলাইন নামক উপাদানটিও শরীর সুস্থ রাখার একটি অন্যতম উপাদান।শরীরে এই উপাদানটির ঘাটতি ঘটলে অনেক সময় কার্ডিওভাসকুলার, লিভারের অসুখ বা নিউরোলজিক্যাল ডিজ-অর্ডার দেখা দিতে পারে।ডিমে থাকে প্রায় ৩০০ মাইক্রোগ্রাম কোলাইন। যা কার্ডিওভাসকুলার সিস্টেম, স্নায়ু, যকৃত্ ও মস্তিষ্ককে নিয়ন্ত্রণে রাখে।
ডিমের উপকারিতা অনেক।ডিম আমাদের শরীরের অনেক রোগই সারাতে সহায়তা করে।ডিমে উপস্থিত প্রোটিন আমাদের নখ বার বার ভেঙে যাওয়া থেকে আটকায়।এছাড়াও আছে ডিমের হাজারো গুনাগুন।তাই শরীরকে সুস্থ রাখতে রোজই খাওয়ার পাতে রাখুন একটি করে ডিম।
পরবর্তীতে পড়ুনঃআপনার কিডনী ভালো আছে তো? কিভাবে জানবেন দেখে নিন উপায়!