বর্তমান বিশ্ব মেতে উঠেছে নতুন নতুন প্রযুক্তি উদ্ভাবনে। বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে বাংলাদেশও এগিয়ে যাচ্ছে প্রযুক্তির সমারোহে।
বর্তমান বিশ্বে যতগুলো প্রযুক্তি ভবিষ্যৎত বাজার দখল করবে তার মধ্যে অন্যতম ভার্চুয়াল কম্পিউটার। এরই ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশের একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে স্থাপন করা হয়েছে দেশের বড় ভার্চুয়াল কম্পিউটার ল্যাব।
ঢাকার আমেরিকান ইন্টারনেশনাল ইউনিভার্সিটিতে আটশত ভার্চুয়াল কম্পিউটার নিয়ে চালু করা হয়েছে সবথেকে বড় ভার্চুয়াল ডেক্সটপ ইনফ্রাস্ট্রাকচার কম্পিউটার ল্যাব।
ভার্চুয়াল বলতে বুঝায় যার বাস্তবে অস্তিত আছে কিন্তু কোনো ফিজিকাল অস্তিত নেই। ভার্চুয়াল ডেক্সটপ এটি এমন একটি প্রযুক্তি যার মাধ্যমে আপনি একটি কম্পিউটারের মধ্যে অনেকগুলো কম্পিউটার বানাতে পারবেন। প্রত্যেকটা ভার্চুয়াল মেশিন একটি কম্পিউটারের মত কাজ করবে। কম্পিউটারে যেসব উপাদান থাকে যেগুলো ছাড়া কম্পিউটার চলে না এই কম্পিউটারেও সেসব উপাদান আছে।
ভিডিআই এর মানে হচ্ছে ভার্চুয়াল ডেস্কটপ ইনফ্রাস্ট্রাকচার। এর দ্বারা বুঝা যায় এটি কোনো আলাদা প্রোডাক্ট নয়। এটি হল অনেকগুলো প্রডাক্টের সমন্বয়ে গঠিত।
ভিডিআই তৈরি করার জন্য দরকার কটি ক্লায়েন্ট কম্পিউটার, একটি সার্ভার, একটি ভিডিআই অপারেটিং সিষ্টেম ও একটি শক্তিশালী নেটওয়ার্ক।
ক্লায়েন্ট কম্পিউটার-
ক্লায়েন্ট কম্পিউটার হচ্ছে নেটওয়ার্কের প্রান্তিক ইউজার। এই কম্পিউটারে যেকোনো অপারেটিং সিস্টেম চালানো যায়। ক্লায়েন্ট কম্পিউটারকে থিন ক্লায়েন্ট কম্পিউটারও বলা হয়। এই কম্পিউটারের কাজ হচ্ছে সার্ভারসের সঙ্গে যোগাযোগ করা।
সার্ভার-
সার্ভারের কাজ হচ্ছে সার্ভিস প্রদান করা। কম্পিউটিং, সার্ভার হলো একটি কম্পিউটার প্রোগ্রাম যেটি অন্য কম্পিউটারের কোন প্রোগ্রামকে সার্ভিস প্রদান করে।
ভিডিআই অপারেটিং সিষ্টেমটি এমনভাবে তৈরি করা, যার মাধ্যমে অনেকগুলো ভার্চুয়াল মেশিন বা ভার্চুয়াল কম্পিউটার তৈরি করা যায়, এবং তাদের ম্যানেজ করা যায়।
যেভাবে কাজ করে ভার্চুয়াল ডেক্সটপ ইনফ্রাস্ট্রাকচার (ভিডিআই)-
প্রথমে সার্ভারে যেকোন একটি অপারেটিং সিষ্টেম ইনস্টল করতে হবে। এই অপারেটিং সিষ্টেমের মধ্যেই ভার্চুয়াল মেশিন তৈরি করার নির্দেশনা দেয়া আছে। এর মধ্যে চালু করতে পারেন আপনার পছন্দের অপারেটিং সিষ্টেম।
যেভাবে ব্যাবহার করবেন ভার্চুয়াল কম্পিউটার-
ব্যাভারকারীরা ক্লায়েন্ট কম্পিউটারের মধ্যেমে তার ভার্চুয়াল কম্পিউটারটি ব্যবহার করতে পারবেন। ট্যাবলেট বা স্মার্টফোন থেকেও এই ভার্চুয়াল কম্পিউটার ব্যাবহার করতে পারবেন। যার মাধ্যমে আইপ্যাডে উইন্ডোজ ডেস্কটপ চালাতে পারবেন। এই ডিভাইসগুলো ব্যবহার হবে শুধুমাত্র ভার্চুয়াল কম্পিউটারকে ব্যাবহার করে প্রয়োজনীয় কাজ সম্পন্ন করার জন্য। অ্যান্ড্রয়েডচালিত ডিভাইসেও এই ভার্চুয়াল কম্পিউটার ব্যাবহার করতে পারবেন।
আমেরিকান ইন্টারনেশনাল ইউনিভার্সিটিতে শিক্ষক/শিক্ষার্থীদের যত ধরনের প্রযুক্তিগত সেবা দেয়া হয় তার প্রায় সব গুলোই তিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের দ্বারা তৈরিকৃত।
ভিডিআই এর জন্য বাজারের থিন ক্লাইন্ড ডিভাইসের পরিবর্তে একটি ১৮.৫ মনিটরের ভিতরে চেরি ট্রায়াল প্রসেসর সমৃদ্ধ একটি থিন ক্লায়েন্ট ডিভাইস ইন্টিগ্রেড ব্যাবহার করা হয়েছে।
একটি ওপেন সোর্স অপারেটিং সিষ্টেমকে কাস্টোমাইজ করা হয়েছে থিন ক্লায়েন্ট অপারেটিং সিস্টেমের জন্য। সিট্রিক্স জেন ব্যবহার করা হয়েছে ভিডিআই অপারেটিং সিষ্টেমের জন্য। উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন ষোলটি সার্ভার ও ক্লায়েন্ট ডিভাইস আটশতটি এবং শক্তিশালী একটি নেটওয়ার্ক নিয়ে তৈরি করা হয়েছে এই ল্যাবটি।
এই সার্ভারগুলোর নিরাপত্তার জন্য সবসময় একটি উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন ডাটা সেন্টার রাখা হয়েছে। পুরো কাজটি করেন ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের নেটওয়ার্ক অপারেশন সেন্টারের পরিচালক মোহাম্মদ মনিরুল ইসলাম তার টিমের তিনজন সদস্যকে নিয়ে।