দিন যত যাচ্ছে আবহাওয়ার পারদও চড়ছে তত। গরমের অস্বস্তি ও অসুখের সাথে সাথে মাথা চাড়া দেয় শরীরে ঘামের দুর্গন্ধ। যদিও ঘাম আমাদের শরীরের তাপমাত্রা সঠিকভাবে বজায় রাখতে সাহায্য করে। এবং ঘাম নির্গত হয়ে আমাদের শরীর সুস্থ থাকে। তবে ঘামের সাথে যে দুর্গন্ধ থাকে সেটি বিশেষ অসুবিধার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। এই দুর্গন্ধের জন্য বিভিন্ন রকম অপ্রিয় পরিস্থিতির সামনা সামনি হতে হয় মানুষকে। তবে কিছু কিছু উপায় আছে যা অবলম্বন করলে এই দুর্গন্ধের হাত থেকে রেহাই পাওয়া যায়। এখন দেখে নেওয়া যাক সি উপায় গুলো।
১) ফাস্টফুড এড়িয়ে চলতে হবেঃ
আমাদের ত্বকের লোমকূপে থাকে এক ধরনের ব্যাকটেরিয়া। সেই ব্যাকটেরিয়া ই ঘামের দুর্গন্ধ সৃষ্টির জন্য দায়ী। তাই ঘামের দুর্গন্ধ আটকাতে হলে আমাদের প্রথমে নজর দিতে হবে আমাদের রোজকার খাদ্যাভাসের দিকে। গরমে যত পরিমাণ ফাস্ট ফুড এবং মসলাদার অথবা তেলে ভাজা খাবার কম খাওয়া যায় ততই ভালো। ফাস্টফুড খেলে শরীরে প্রচন্ড তাপ উৎপন্ন হয় আর সেই তাপ কমাতেই শরীর থেকে বের হয় ঘাম। প্রোটিন শরীরের সর্বোচ্চ তাপ উৎপন্ন করে। তাই গরমে যথাসম্ভব প্রোটিন যুক্ত খাদ্য এড়িয়ে চলুন। গরমে হালকা খাবার আপনার খাদ্যাভাস এ যোগ করুন। দৈনন্দিন এর খাদ্য তালিকায় ফল এবং শাকসবজি রাখুন যা আপনার হজম শক্তি বাড়াতে সুবিধা করবে। এছাড়াও গরমে প্রচুর পরিমাণে জল পান করুন। এতে শরীরে জলের পরিমাণ ঠিক থাকবে ফলে ঘামও কম হবে।
২) অতিরিক্ত চিন্তা ত্যাগ করতে হবেঃ
বেশি চিন্তা স্বাস্থ্যের পক্ষে ভীষণভাবে ক্ষতিকর। বেশি চিন্তার ফলে শরীরের ঘাম এর পরিমাণ বৃদ্ধি পায়। কোন বিষয় নিয়ে বেশি চিন্তা করলে শরীরে স্ট্রেস হরমোনের ক্ষরণ বেশি হয় ফলে দেহের উষ্ণতা বাড়তে থাকে। আর সেই উষ্ণতা বজায় রাখার জন্য শরীর থেকে ঘাম নির্গত হয়। অথচ দৈনন্দিন দিনে বিভিন্ন কাজের ক্ষেত্রে চিন্তা এবং চাপ থাকা অসম্ভব নয়। তাই এই চাপ বা চিন্তা দূর রাখতে নিয়মিত ব্যায়াম ও ধ্যান করুন। এতে দুশ্চিন্তা অনেকটা কমবে এবং শরীর রিলাক্স হবে। ধ্যান করলে সারাদিন এমন বেশ ফুরফুরে থাকে। স্ট্রেস হরমোন তাতে কমে যাবে এবং ঘাম নির্গত হবে না বেশি।ফলে ঘামের দুর্গন্ধের দুশ্চিন্তাও মিটবে।
৩) গরমকালে হালকা রঙের জামা পড়তে হবেঃ
গরমে সব সময় হালকা রঙের জামা কাপড় পরা উচিত। গরমকালে প্রচন্ড রোদের মধ্যে ডিপ কালারের জামা কাপড় পড়ে বেরোলে তা বেশি তাপ শোষণ করে। তাই দিনের বেলায় হালকা কালারের জামা পরা অভ্যাস করুন। হালকা রঙের জামা তাপকে প্রতিফলিত করে বের করে দেয়। এর ফলে শরীর তুলনামূলকভাবে ঠান্ডা থাকে এবং ঘাম কম হয়। কিন্তু কোনো কারণে যদি ডার্ক কালারের জামা পড়তেই হয় ভেতরে অবশ্যই অন্তর্বাস পড়ে নেবেন। ঘাম হলেও অন্তর্বাস সেই ঘাম শুষে নেবে এবং আপনার জামাকে দুর্গন্ধের হাত থেকে বাঁচাবে।
৪) অ্যান্টিপারস্পিরেন্ট ব্যবহার করুনঃ
ঘাম হওয়া আটকাতে অ্যান্টিপারস্পিরেন্ট ব্যবহার করুন। রোজ ঘুমাতে যাওয়ার আগে রাতের বেলায় শরীরের যেখানে যেখানে ঘাম বেশি হয় সেসব জায়গায় এটি দিয়ে নিন। এটি শরীরে দেওয়ার পর লোমকুপে গিয়ে কাজ করতে বেশ কিছুটা সময় নয়।তাই রাতের বেলায় দিলে কাজ হয় বেশি। বেশ কিছুদিন এটি ব্যবহার করলে দেখতে পাবেন আপনার ঘাম হওয়া আগের থেকে তুলনামূলক ভাবে কমে গেছে।
৫) যতটা পাড়া যায় বাইরে বেড়ানো এড়িয়ে চলুনঃ
ব্যস্ত মানুষের পক্ষে এটি মানা খুবই কঠিন হলেও গরমে যতটা পারবেন রোদে বেরোনো থেকে এড়িয়ে চলবেন। আর বেরোলেও যেই জায়গায় ছায়া থাকবে সেই জায়গায় বেশিক্ষণ কাটানোর চেষ্টা করবেন। ঘরে থাকলে ঘরের পর্দা টেনে রাখবেন। যাতে বাইরে রোদ ঘরে ঢুকে ঘর কে উত্তপ্ত না করতে পারে। যতটা পারবেন গরমের নিজের শরীরকে শীতল রাখার চেষ্টা করবেন এর ফলে ঘাম কম হবে স্বভাবতই তার জন্য ঘামের দুর্গন্ধ ও দূর হবে।