দেশের সাম্প্রদায়িক কিছু ঘটনা নিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি দিয়েছিলেন সম্প্রতি অপর্ণা সেন, কৌশিক সেন, শ্যাম বেনেগাল, আদুর গোপালাকৃষ্ণন, মনি রত্নম, রামচন্দ্র গুহ সহ আরো ৪৯ জন বিদ্বজ্জন। জয় শ্রীরাম স্লোগান দিয়ে কিছু সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর হামলা চালাচ্ছে কিছু দুষ্কৃতী এমন অভিযোগ নিয়ে ওই চিঠিতে উদ্বেগ প্রকাশ করেছিলেন ওই বুদ্ধিজীবীগণ। আর তারপরই এই চিঠির বিরুদ্ধে সমালোচনায় সরব হন সমাজের একাংশ। এর মধ্যেই তাদের বিরুদ্ধে দেশদ্রোহিতার অভিযোগে মামলা করা হলো বিহার আদালতে। মামলা করেছেন আইনজীবী সুধীর কুমার ওঝা।
গণপিটুনি এবং সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর হামলার অভিযোগ এনে প্রধানমন্ত্রী কে খোলা চিঠি দিয়েছিলেন দেশের ৪৯ জন বিদ্বজ্জন। সেই চিঠির বিরুদ্ধেই বিহারের আদালতে দেশদ্রোহিতার অভিযোগ আনা হলো ওই বুদ্ধিজীবীদের বিরুদ্ধে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির উন্নয়নে ব্যাঘাত ঘটানো এবং তার সাথে দেশের ভাবমূর্তি নষ্ট করার প্রচেষ্টা চালাচ্ছেন ওই বুদ্ধিজীবীরা এমনটা অভিযোগ করেছেন মামলাকারী সুধীর কুমার ওঝা। তিনি পেশায় একজন আইনজীবী। এই ৪৯ জন বিশিষ্ট বুদ্ধিজীবীদের বিরুদ্ধে দেশদ্রোহীতা, ধর্মীয় ভাবাবেগে আঘাত, দেশের অখন্ডতা ক্ষুন্ন করা এসব সহ আরো একাধিক ভারতীয় দণ্ডবিধির বিভিন্ন ধারায় মামলা করা হয়েছে।
এই চিঠির পক্ষে কথা বলার সময় কেরল পরিচালক আদুর গোপালাকৃষ্ণন জানিয়েছিলেন তিনি ছোট থেকে রামের মাহাত্ম্য শুনে বড় হয়েছেন। কিন্তু এটি বিশেষ উদ্বেগের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে যে এখন সেই রাম-এর শ্লোগানকে গণপিটুনিতে ব্যবহার করা হচ্ছে। ভবিষ্যতে এই পরিস্থিতি ভয়ঙ্কর আকার ধারণ করতে পারে বলে ধারণা তার।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য ৪৯ জন বুদ্ধিজীবী প্রধানমন্ত্রী কে দেশের সাম্প্রদায়িক কিছু ঘটনা নিয়ে খোলা চিঠি দেওয়ার পর তাদের বিরুদ্ধে সমালোচনা মুখর হয়ে ছিল সমাজের একাংশ। তাদের মধ্যে রয়েছেন কঙ্গনা রানাওয়াত, প্রসুন যশি, মধুর ভান্ডারকর, বিবেক অগ্নিহোত্রী সহ ৬১ জন বিশিষ্ট ব্যক্তি। তারা অপর্ণা সেন এবং কৌশিক সেন সহ ওই ৪৯ জন বিদ্বজ্জনের চিঠির বিরুদ্ধে তারা চিঠি দিয়েছিলেন। অপর্ণা সেন এবং কৌশিক সেন দের চিঠির বিরুদ্ধে বলতে গিয়ে তারা বলেছেন অপব্যাখ্যা এবং রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রণোদিত ভাবে তারা প্রধানমন্ত্রী কে এই চিঠি দিয়েছেন। কিছু ঘটনা উল্লেখ করে তারা ঐ বিদ্বজনদের জিজ্ঞেস করেছেন সেই সব ঘটনার সময় তারা কেন কোন মুখ খোলেননি।
তার মধ্যেই দেশদ্রোহিতার অভিযোগ এনে ওই ৪৯ জনের বিরুদ্ধে মামলা করলেন আইনজীবী সুধীর কুমার ওঝা। সেখানে তিনি সাক্ষী হিসেবে কঙ্গনা রানাওয়াত, মধুর ভান্ডারকর, বিবেক অগ্নিহোত্রীদের নামও উল্লেখ করেছেন। এই মামলার শুনানি আগামী তেশরা আগস্ট হতে পারে বলে জানা যাচ্ছে।