কলা প্রায় অনেক মানুষেরই দৈনন্দিন খাদ্যাভাসের একটি অঙ্গ।কিন্তু কলা প্রত্যেকদিন খেলেও অনেকেই জানেনা শরীরের ক্ষেত্রে কলার উপকারিতা ।কলা আমাদের শরীরের অনেক উপকারে লাগে। এছাড়াও কলা আমাদের শরীরের অনেক রোগ নিরাময় করতেও সাহায্য করে।এখন ঘরে ঘরে প্রায় সবারই উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা। এই রোগের প্রকোপ দিনে দিনে বৃদ্ধি পেয়ে চলেছে।
উচ্চ রক্তচাপ আমাদের শরীরের পক্ষে মোটেই স্বাস্থ্যকর নয়। এটি আমাদের শরীরে আরো অনেক রোগ ডেকে আনতে পারে। এমনই এক সাংঘাতিক রোগ উচ্চ রক্তচাপ কমানোর বা নিরাময় করার ক্ষমতা রাখে এই কলা।প্রতিটি মানুষেরই উচ্চ রক্তচাপ কমানোর জন্য রোজ একটি করে কলা খাওয়া উচিত।কলার মধ্যে রয়েছে প্রচুর মাত্রায় পটাশিয়াম যা শরীরে প্রবেশ করার পর শরীরের সোডিয়াম এর প্রভাবকে কমাতে শুরু করে। শরীরে সোডিয়াম এর প্রভাব কমে গেলে স্বাভাবিকভাবেই রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে চলে আসতে বেশি সময় লাগে না।এছাড়াও আরো নানা শারীরিক সমস্যার সমাধান করে এই ফল।
দেখে নিন কলার উপকারিতা গুলোঃ
১) কলা খেলে শরীরের হাড় শক্ত হয়:

কলার মধ্যে আছে ক্যালসিয়াম যা আমাদের শরীরের হাড় শক্ত করতে সাহায্য করে।ফলে স্বাভাবিকভাবেই কলা খেলে আমাদের শরীরের হাড় হবে শক্তপোক্ত।হাড় শক্ত করার সাথে সাথে হাড়ের যে রোগ যেমন আর্থ্রাইটিস সেগুলো কমাতেও সাহায্য করে এই ফল।
২) কলা খেলে হজম ক্ষমতা বেড়ে যায়:

কলা আমাদের হজম শক্তি বৃদ্ধিতে সাহায্য করে।কলার মধ্যে এমন কিছু উপাদান আছে যা আমাদের শরীরের ভিতরে গিয়ে আমাদের শরীরের পাচক রসের ক্ষরণ কে বাড়িয়ে দেয়।ফলত স্বাভাবিক ভাবেই আমাদের হজম প্রক্রিয়ার উন্নতি ঘটে।
৩) কলা ডায়াবেটিসের মতো রোগকেও সারাতে সাহায্য করে:

কলার মধ্যে কমবেশি তিন গ্রামের মতো ডায়েটারি ফাইবার থাকে। যা আমাদের শরীরের শর্করা নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে। ফলে কলা খেলে আমাদের শরীরে ডায়াবেটিস এর মত মারণ রোগও ধারে কাছে ঘেষতে পারে না।ডাক্তারাও টাইপ ওয়ান এবং টু এই দু’ধরনের ডায়াবেটিসের রোগীদের এই ফলটি খাওয়ার পরামর্শ দেন।
৪) দৃষ্টিশক্তি বাড়াতে ও কলা সাহায্য করে:
কলাতে আছে ক্যালসিয়াম পটাশিয়াম এবং আরো নানাবিধ উপাদান যা চোখের দৃষ্টিশক্তি বাড়াতে সাহায্য করে। এছারাও নিয়মিত কলা খেলে রেটিনার ক্ষমতাও এতটা বৃদ্ধি পায় যে ম্যাকুলার ডিজেনারেশন বা অন্য কোন ধরনের চোখের রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা প্রায় থাকে না বললেই চলে। তাই দৃষ্টি শক্তির উন্নতি ঘটানোর জন্য কলার কোন বিকল্প নেই।
৫) স্ট্রেস কমাতে ও কলার জুড়ি মেলা ভার:
এখনকার দিনে প্রায় সবাই স্ট্রেস নামক এই সমস্যার শিকার। সেই জায়গায় দাঁড়িয়ে নিয়মিত যদি কেউ কলা খান তাহলে স্ট্রেস প্রায় শরীরে থাকে না বললেই চলে। নিয়মিত কলা খেলে শরীরে ট্রিপটোফেন নামক একটি উপাদান এর মাত্রা বৃদ্ধি পেতে শুরু করে। এতে আমাদের শরীরে যে ফিল গুড হরমোন থাকে তার ক্ষরণমাত্রা অনেক পরিমাণে বেড়ে যায়।ফলে স্বাভাবিকভাবেই শরীরের স্ট্রেস লেভেল অনেকখানি কমে যায় এবং সেইসঙ্গে মানসিক অবসাদের প্রকোপও কমতে শুরু করে। তাই শরীরের স্ট্রেস কম রাখতে রোজ ডায়েট এর মধ্যে কলা কে অবশ্যই রাখবেন।
৬) কলা শরীরের অ্যানিমিয়ার মত রোগ দূর করতে সাহায্য করে:

আমাদের শরীরে লোহিত কণিকার মাত্রা বৃদ্ধি করে আয়রন নামক একটি উপাদান। আর কলাতে আয়রনের মাত্রা রয়েছে প্রচুর পরিমাণে। তাই যারা এই রক্তাল্পতা রোগে ভুগছেন তারা যদি নিয়মিত আয়রন ট্যাবলেট এর পাশাপাশি কলা খেতে পারেন তাহলে অনেক উপকার পাবেন।
৭) রোগ দূর করার পাশাপাশি ত্বকের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করতে কলার বিকল্প নেই:
কলা খাওয়ার পর কলার খোসাটাকে ফেলে দেবেন না। কলার খোসা যদি মুখে লাগাতে পারেন তাহলে ত্বকের যেমন রোগের প্রকোপ কমবে সেরকমই ত্বকের হারিয়ে যাওয়া ঔজ্জ্বল্যও ফিরে আসে। কলার খোসার মধ্যে থাকে ফ্যাটি এসিড সেটি এই ক্ষেত্রে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে।