সময় দ্রুত কেটে যায়। সময় কেটে যাওয়া মানেই হচ্ছে আমাদের বয়স বেড়ে যাওয়া। এটি মেনে নিতেই হবে যে বয়সকে আমরা ধরে রাখতে পারবো না। তবে হ্যা, বয়সের ছাপ বা বলিরেখা আমরা কমাতে পারবো। কিছুটা অনুশীলন, কিছু নিয়ম কানুন, কিছু খাদ্যাভ্যাস, কিছুটা সচেতনতা আমাদেরকে সাহায্য করবে বয়সের ছাপকে ঢেকে রাখতে। নিয়ম করে নিচের কিছু নিয়ম প্রতিদিন মেনে চললে বয়সের অপ্রিয় বলিরেখা দূর করতে পারবেন আর হয়ে উঠতে পারবেন স্নিগ্ধ,সতেজ,উৎফুল্ল ও প্রাণবন্ত!
১। লেবুর রস মাখুন
লেবুর রসের মত খুব সাধারণ একটি জিনিস মুখে নিয়মিত ব্যবহার করলে তা আশ্চর্য রকম কাজ করে। আমরা সবাই জানি যে লেবু ভিটামিন সি তে ভরপুর। এই ভিটামিন ত্বকের শক্তি ও স্থিতিস্থাপকতা বজায় রাখার গঠনমূলক প্রোটিন কোলাজেনের সমন্বয়ের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এছাড়া এই ভিটামিন সি ক্ষতিকর ফ্রি রেডিক্যালকে নিরোপেক্ষ করে যা ত্বকের বুড়িয়ে যাওয়ার গতি বৃদ্ধি করতে পারে।
২। ধূমপান বর্জন করা
ধূমপান করবেন না। ধূমপান ত্বকে বলিরেখা সৃষ্টির জন্য অনেকাংশে দায়ী। তাই আবার সিগারেট ধরানোর আগে বলিরেখার কথা মাথায় রাখুন।
৩। বলিরেখা দূর করুন অ্যালোভেরা জেল দিয়ে
ত্বকের পরিচর্যায় আরো একটি উপাদান হচ্ছে অ্যালোভেরা জেল। এই আঠালো উপাদানটিও অ্যাভোকাডোর মত ভিটামিন ই তে পরিপূর্ণ। এছাড়া অ্যালোভেরা জেলে রয়েছে ভিটামিন সি। ভিটামিন সি এবং ই এর সম্মিলিত গুণাগুণের ফলে তা ক্ষতিগ্রস্ত ত্বককে মেরামত করে, ত্বককে করে আর্দ্র ও টানটান এবং এটি কোলাজেনের সংশ্লেষণ করে।
৪। পর্যাপ্ত ঘুম
কমপক্ষে সাত ঘণ্টা ঘুমান । ঘুমানোর সময় পিঠের উপর ভর করে ঘুমান। অনেকেই পেটের উপর ভর দিয়ে ঘুমায়। এতে চেহারার উপর প্রেশার সৃষ্টি হয়, যা চামড়াকে ঝুলিয়ে দেয়।
৫। ব্যবহার করুন হলুদ
পেঁপের মত হলুদেরও রয়েছে প্রদাহ বিরোধী গুণাগুণ। পানি দিয়ে তৈরি হলুদের পেস্ট খুব সহজেই বলিরেখা দূর করতে সাহায্য করে। চাইলে পানির পরিবর্তে কিছুটা নারিকেল তেল দিয়ে যদি পেস্ট করা হয় তাহলে এর কার্যকারিতা আরো বেড়ে যায়।
৬। ময়েশ্চারাইজার
মুখ সব সময় পরিষ্কার রাখতে হবে। আবার অতিরিক্ত মুখ ধোয়া ঠিক নয়। কারণ অতিরিক্ত কোন কিছু ভালো নয়। রাতে ঘুমানোর আগে ময়েশ্চারাইজার লাগিয়ে ঘুমান।
৭। মুখে দিন মধুর সাথে ডিমের সাদা অংশ
ডিমের সাদা অংশের একটি ভালো দিক হচ্ছে এটি ত্বককে করে টান টান। এতে থাকা উচ্চ মাত্রার প্রোটিন ত্বকের ক্ষতি পুনোরুদ্ধার করে বয়সের চিহ্ন কমিয়ে দিতে সাহায্য করে। তাই ত্বকের বলিরেখা দূর করার মাস্ক বানাতে প্রথমে একটি ডিমের সাদা অংশ বিট করে তাতে এক টেবিল চামচ অপরিশোধিত মধু মিশিয়ে মুখে লাগান। ১৫-২০ মিনিট রেখে কুসুম গরম পানিতে মুখ ধুয়ে নিন।
৮। ত্বকে ব্যবহার করুন নারকেল তেল
প্রকৃতিতে সৌন্দর্যচর্চার জন্য অনেক ধরনের নিরাপদ, সাশ্রয়ী এবং কার্যকরী উপাদান ছড়িয়ে থাকে যা আমরা বুঝতে পারি না। নারিকেল তেল তার মাঝে অন্যতম। সুস্বাদু সুগন্ধের স্বাস্থ্যকর এই তেল ত্বকের চমৎকার আর্দ্রতাদায়ক উপাদান। ত্বকের কোষেরও আর্দ্রতা বজায় রাখে এবং বলিরেখা দূর করে। তাই ত্বকে হাসির রেখা ও বলি রেখা দূর করতে নিয়মিত নারিকেল তেল ব্যবহার করুন।
৯। মুখের মধ্যে যতটা সম্ভব কম হাত লাগান।
১০। ঘুমানোর আগে সপ্তাহে ২-৩ বার অলিভ অয়েল কয়েক ফোঁটা হাতে নিয়ে ৫ মিনিট মুখে ম্যাসাজ করুন। তারপর ভেজা তোয়ালে দিয়ে মুছে ফেলুন।
১১। মুখের যে অংশে মনে হচ্ছে কিছুটা বলীরেখার প্রভাব পড়ছে ,সেখানে লেমন জুস দিয়ে ম্যাসাজ করুন। দেখবেন উপকার পাচ্ছেন।
১২। অ্যাভোকাডো
ত্বকের বহুবিধ সমস্যা সমাধানে অ্যাভোকাডোর ভূমিকা রয়েছে। এর কারণ হচ্ছে এই বিদেশী ফলটি ভিটামিন ই সমৃদ্ধ যার অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ত্বকের সুস্থতা বজায় রাখে। একটি অ্যাভোকাডো কাঁটাচামচ দিয়ে খুব ভালো করে ম্যাশ করে নিয়ে নিয়মিত মুখে লাগান যা ত্বককে প্রচুর আর্দ্রতা দেয়ার পাশাপাশি বলিরেখা দূর করবে।