অতীতের দেবতাদের ঘর আজ হয়েছে দেওঘর। সারা ভারত থেকে তীর্থযাত্রীদের সঙ্গে পর্যটক আসেন দেওঘরে। আবার শীতকালে ভিড় বাড়ে স্বাস্থ্যান্বেষীদের। স্টেশন থেকে পাঁচ মিনিটের পায়ে হাঁটা পথে ক্লক টাওয়ারকে কেন্দ্র করে শহরের বিস্তার, গড়ে উঠেছে বাজারহাট। বাগিচায় ঘেরা ফুল ফলে ঘেরা বাংলো ধরনের বাড়িগুলো সৌন্দর্য বাড়িয়েছে শহরের।
যে কোন উইকেন্ডে বা ছুটির দিনে দিন দুয়েক কাটিয়ে আসা যায় দেওঘরে। পায়ে পায়ে অটো ভাড়া করে দেখে নিন ক্লক টাওয়ার থেকে ২ কিমি দূরে করণীবাগে নওলাক্ষি মন্দির, নওলাক্ষি মন্দির থেকে দেড় কিমি দূরে কুণ্ডেশ্বরী মন্দির, ৩ কিমি দূরে বমপাস টাউনে নবদুর্গা মন্দির, ২ কিমি দূরে ডানদিকে উইলিয়ামস টাউনে সুন্দর প্রকৃতির মাঝে রামকৃষ্ণ মিশন, ৩ কিমি দূরে ঠাকুর অনুকুলচন্দ্রের আশ্রম সত্সঙ্গ নগর, ক্লক টাওয়ার থেকে ৪ কিমি দূরে কাছারি রোডে অনুচ্চ নন্দন পাহাড়।
৯৫টি ধাপ সিঁড়ি বেয়ে জয় নেওয়া যায় কোন এক সকাল বা বিকালে। পাহাড়ে শিরে চিত্ত বিনোদনের পসরা নিয়ে গড়ে উঠেছে মনোরঞ্জন পার্ক। হিল টপ বাংলোতে থাকার ব্যবস্থাও মেলে। ক্লক টাওয়ার থেকে ১২ কিমি দূরে শহরের উপকণ্ঠে তপোবন। ১৮৪৮ খ্রীস্টাব্দে বালানন্দ ব্রহ্মচারী মহারাজ উজ্জয়িনী থেকে এখানে এসে ভজন গুহায় তপস্যা করে সিদ্ধিলাভ করেন। প্রকৃতির আকর্ষণে যাত্রীও যাচ্ছেন ৩৫০ মিটার উচ্চ পাহাড়চূড়ায়। শহর থেকে ২০ কিমি দূরে ত্রিকূট পাহাড় দিনে দিনে অভিযান করে নেওয়া যায়। ক্লক টাওয়ার থেকে বাস ও ট্রেকার যাচ্ছে। তবে বাস যাত্রায় ২ কিমি হাঁটতে হয় কিন্তু ট্রেকার পৌঁছায় পাহাড়ের পাদদেশে। নানান জীব জন্তুর দেখা মেলা অসম্ভব নয় পাহাড়ভুমে। পাহাড়ের উপর থেকে চারিধারের শোভা অতি মনোরম। পাহাড় চরতে গাইড মেলে।
যাওয়ার উপায়ঃ
দেওঘরের কাছে রেল স্টেশন জসিডি। দুরত্ব ৬ কিমি। হাওড়া থেকে জসিডি যাচ্ছে ১২৩০৩ পূর্বা এক্সপ্রেস (ছাড়ে সকাল ৮.০৫ পৌঁছায় দুপুর ১২.১২), ১৩০০৭ উদান আভা তুফান এক্সপ্রেস (ছাড়ে সকাল ৯.৩৫ পৌঁছায় বিকাল ৩.৩৮০। শিয়ালদা থেকে ১২৩১৭ আকাল তখত এক্সপ্রেস (ছাড়ে সকাল ৭.৪০ পৌঁছায় দুপুর ১২.১৪)। জসিডি থেকে বাস বা ট্রেকারে করে ২০ মিনিটে পৌঁছে যাওয়া যায় দেওঘরে। লোকাল ট্রেনও যাচ্ছে জসিডি থেকে দেওঘর। তবে বাস বা ট্রেকারে যাওয়া ভালো। মধুপুর থেকে বাসে বাসে দেওঘর যাওয়া যায়। দুরত্ব ৩৫ কিমি। সময় লাগে দেড় ঘন্টার মত।